কেন অনেকে ভয়ের সিনেমা/বই পছন্দ করে? - রিটন খান
পাঠকরা এই বই থেকে ভয় ও উদ্বেগ সম্পর্কে গভীর আলোচনা পাবেন এবং কীভাবে এর নেতিবাচক প্রভাব কমানো যায়, প্রয়োজন হলে চিকিৎসার মাধ্যমে কীভাবে এর মোকাবিলা করা যায় এবং কীভাবে নিজেকে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে র
আমি ছোটবেলায় ভৌতিক গল্প পড়তে এবং ভয়ের সিনেমা দেখতে খুব পছন্দ করতাম। রাতের বেলা যখন চারপাশ নিস্তব্ধ হয়ে যেত, তখন মনে হতো যে সেই গল্পগুলোর ভূত-প্রেত, অদ্ভুত সব চরিত্র যেন আমার কল্পনায় আরও জীবন্ত হয়ে উঠছে। হরর সিনেমার প্রতিটা সাসপেন্স মুহূর্ত আমাকে শিহরিত করত, যেমনভাবে গল্পের প্রতিটা অদ্ভুত মোড় আমাকে আবিষ্ট করে রাখত। তখনও বুঝতাম না, কেন ভয়ের অনুভূতি এতটা আকর্ষণীয় মনে হয়—কেন আমরা অজানা বিপদের মুখোমুখি হওয়ার অনুভূতিকে বারবার উপভোগ করি। তবে এখন বুঝতে পারি, সেই ভয়ের অনুভূতিটা আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করে—নিজের অজান্তেই আমরা শিখি, কীভাবে অস্থিরতার মধ্যে নিজেকে স্থির রাখতে হয়। সেই ভৌতিক গল্প আর সিনেমাগুলো আমার কল্পনা শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি, সাহস এবং পরিস্থিতি মোকাবিলার ক্ষমতাও গড়ে তুলেছিল।
ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটির অ্যারাশ জাভানবাখত, এম.ডি., একজন জনপ্রিয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং স্নায়ুবিজ্ঞান গবেষক, অনেক গবেষণা ও কাটাছেড়ার পরে তিনি একটি বই লিখেছেন।
তার প্রথম বই, “আফ্রেইড: আন্ডারস্ট্যান্ডিং দ্য পারপাস অফ ফিয়ার অ্যান্ড হারনেসিং দ্য পাওয়ার অফ অ্যাংজাইটি” (রোয়ম্যান অ্যান্ড লিটলফিল্ড পাবলিশার্স)।
ভয় ও উদ্বেগের উপর “আফ্রেইড” একটি বিস্তৃত এবং আকর্ষণীয় পর্যালোচনা, যা বিজ্ঞানের ভিত্তিতে রচিত। এতে বিবর্তন থেকে শুরু করে আধুনিক দিনের চ্যালেঞ্জ, এবং কীভাবে ক্লিনিশিয়ানরা আজকের দিনে ট্রমা, উদ্বেগ এবং পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD) চিকিৎসা করেন, তার বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। ড. জাভানবাখত বলেন, ভয় একটি প্রাচীন এবং গভীরভাবে প্রোথিত অনুভূতি, যা আজকের সমাজে বিশেষ করে মহামারী পরবর্তী এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত উপস্থিত।
বইটি আলোচনা করে কীভাবে শৈশবের অভিজ্ঞতা বড় হয়ে ভয় এবং উদ্বেগের ভূমিকা নির্ধারণ করে, ভয় জিনগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে কিনা, অতিরিক্ত ভয় ও উদ্বেগ মস্তিষ্ক এবং শরীরের উপর কী প্রভাব ফেলে, এবং ট্রমার পরবর্তী সময়ে ভয় এবং উদ্বেগের ভূমিকা কী। ড. জাভানবাখত সহজ ভাষায় বোঝান কেন মানুষ ভয় পেতে ভালোবাসে; সাহস, অর্থ, আক্রমণাত্মকতা, সৃজনশীলতা এবং ভয়ের মধ্যে সংযোগ কী; এবং ভয় ও উদ্বেগজনিত রোগগুলো কীভাবে পরিচালনা করা যায়।
তিনি এমনকি নিজের উচ্চতার ভয়ের কথাও উল্লেখ করেছেন, এবং কীভাবে তিনি এটি জয় করেছেন, শেষ পর্যন্ত একটি ফাইটার জেটে উড়ার সাহস অর্জন করেন।
পাঠকরা এই বই থেকে ভয় ও উদ্বেগ সম্পর্কে গভীর আলোচনা পাবেন এবং কীভাবে এর নেতিবাচক প্রভাব কমানো যায়, প্রয়োজন হলে চিকিৎসার মাধ্যমে কীভাবে এর মোকাবিলা করা যায় এবং কীভাবে নিজেকে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করা যায় তা জানতে পারবেন।
ড. জাভানবাখত, সাইকিয়াট্রি এবং বিহেভিয়োরাল নিউরোসায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক, ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটির স্ট্রেস, ট্রমা এবং অ্যাংজাইটি রিসার্চ ক্লিনিক (STARC) পরিচালনা করেন। এই বিষয়গুলো তিনি খুব ভালোভাবেই জানেন। তিনি উদ্বেগ এবং PTSD-এর জীববিজ্ঞান ও চিকিৎসার উপর তার গবেষণার জন্য বিখ্যাত, এবং নতুন অগমেন্টেড রিয়েলিটি চিকিৎসা প্রযুক্তির উদ্ভাবক। তার ক্লিনিকে, তিনি PTSD-এ আক্রান্ত নাগরিক, শরণার্থী এবং দূর্যোগ মোকাবিলায় প্রথম সাড়াদানকারীদের চিকিৎসা করেন।
ড. জাভানবাখত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তার বিশেষজ্ঞ মতামত প্রদানে নিয়মিত আমন্ত্রিত হন। তার প্রকাশিত গবেষণা লক্ষ লক্ষ পাঠক পড়েছেন। CNN, NPR, Smithsonian, Al Jazeera, Washington Post, PBS, Scientific American, Lancet, এবং আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়া এবং বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান তার কাজের প্রশংসা করেছে। তিনি নিয়মিত The Conversation-এ লেখেন, এবং তিনি PBS ডকুমেন্টারি “Mysteries of Mental Illness”-এ একাডেমিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।
তিনি পাঠকের সময়ের কথা মাথায় রেখে তিনি প্রতিটি অধ্যায় স্বাধীনভাবে পড়া যেতে পারে এমন ব্যবস্থা করেছেন। অধ্যায়ের শিরোনামগুলোর মধ্যে রয়েছে “The Origin of Fear: Evolved to be Scared,” “Why Is My Heart Pounding?,” “Fear in the Body,” “Riding the Beast: How to Use Fear to Our Advantage,” এবং “Fear That Rules Us: Politics of Fear”।
ড. জাভানবাখত এবং স্ট্রেস, ট্রমা এবং অ্যাংজাইটি রিসার্চ ক্লিনিক সম্পর্কে আরও জানতে, www.starclab.org ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।