রাজা হলে কপাল খুলে যায়
ডেমোক্র্যাটদের সামনে শাটডাউন দ্বন্দ্ব: ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদী সরকারকে অর্থায়ন না প্রতিরোধ?
রিটন খান
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমেরিকায় সরকারিভাবে অর্থায়নের ভাঁড়ার শুকিয়ে যাবে। তখন ডেমোক্র্যাটদের সামনে দাঁড়াবে এক অস্বস্তিকর পন্থা—রিপাবলিকানদের সঙ্গে মিলে এমন এক সরকারকে চালু রাখা, যেটাকে ট্রাম্প ধীরে ধীরে প্রতিশোধ আর কর্তৃত্ববাদী দখলের যন্ত্রে রূপান্তর করছেন, নাকি সরকারের শাটডাউনের ঝুঁকি নেওয়া।
ডেমোক্র্যাটরা এই একই সংকটে পড়েছিল ছ’মাস আগেও—গত মার্চ মাসে। তখনও ডজ নামের দানবটা চেইনসো হাতে আমলাতন্ত্রের অন্তর্গত কাঠামো কেটে চলেছিল, আর চারপাশে কেবল কর্কশ শব্দ আর উড়ন্ত গুঁড়োর ধুলো।
দল বেঁধে চাকরি হারাচ্ছিলেন সরকারি কর্মচারীরা। অনুদান আর ভর্তুকিগুলোকে গলা টিপে ধরা হচ্ছিল, তারপর সেগুলোকে পাল্টে দেওয়া হচ্ছিল রাজনৈতিক ক্ষমতার হাতিয়ার আর শাস্তির অস্ত্রে। ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করছিলেন—তার শত্রুদের তদন্ত নয়, সরাসরি নিপীড়নের জন্য।
মেক্সিকো আর কানাডার ওপর বিস্ময়কর শুল্ক চাপানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। প্রেসিডেন্সির সেই পর্যায়টা যেন একেবারে মুজল ভেলোসিটির মতো—গতি, শব্দ আর ধ্বংসের মিশ্রণ। আর সেই মুহূর্তে ডেমোক্র্যাটরা একেবারেই ক্লান্ত, অভিভূত, শক্তিহীন দেখাচ্ছিল।
আমার বন্ধুরা বলছে ডেমোক্র্যাটদের সামনে নতুন কোনো বার্তা নেই। আসলে তাদের ঘাটতি বার্তায় ছিল না—তাদের ঘাটতি ছিল ক্ষমতায়।
তাদের হাতে কোনো ক্ষমতা ছিল না। না হাউস, না সিনেট—কোথাও তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু তবু ছিল একটুখানি চাপ সৃষ্টির সুযোগ।
সরকারি অর্থায়ন চালু রাখতে রিপাবলিকান সিনেটরদের ডেমোক্র্যাটদের ভোট দরকার ছিল। শুধু এক-দুটি নয়—কমপক্ষে সাতজন ডেমোক্র্যাট ছাড়া সেই জাদুকরি ৬০ ভোটের সীমা স্পর্শ করা অসম্ভব।
হাউসের ডেমোক্র্যাটরা চাইছিলেন, সিনেটের সহকর্মীরা যেন সেই ভোট আটকে রাখেন। তাদের লক্ষ্য ছিল সরাসরি শাটডাউন। কিন্তু চ্যাক শুমার, সিনেট ডেমোক্র্যাটদের নেতা, তেমনটা চাননি।
তিনি তহবিল বিলের পক্ষে ভোট দিলেন, এবং তার সঙ্গে আরও কয়েকজনকে রাজি করালেন একই কাজ করতে। বিলটি পাশ হয়ে গেল। বহু ডেমোক্র্যাটের কাছে এটা পুরোপুরি পাগলামি ছাড়া আর কিছুই মনে হয়নি।
ভেবে দেখুন কেমন অবস্থা—সিনেট ডেমোক্র্যাটরা এলন মাস্কের কাছে আত্মসমর্পণের কথাও ভাবছেন—এটাই যেন এক চপেটাঘাত, বিশ্বাসঘাতকতার কষাঘাত, আর সেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। সেদিন যা ঘটেছিল, আসলে তাই-ই—অকারণে সমর্পণ।
এটাই ছিল ডেমোক্র্যাটদের কাছে সত্যিকারের সুযোগ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার। অথচ তারা কী করল? মুহূর্তের মধ্যে রাজনোইতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়ল। তাহলে তাদের অস্তিত্বের মানে কী?
আমার আশঙ্কা, সামনে এগোতে হলে সিনেট ডেমোক্র্যাটদের নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সময় এসে গেছে।
যদিও জানতাম, বেশিরভাগ মানুষ আমার সঙ্গে একমত হবেন না। সে সময়টা ছিল ডেমোক্র্যাটদের কৌশলে এক প্রাথমিক ভাঙনের কাল। আমি তখন কথা বলছিলাম সব পক্ষের সঙ্গেই—শুমারের সঙ্গে, হাউস নেতৃত্বের সঙ্গে, সিনেট নেতৃত্বের সঙ্গে, আবার কংগ্রেসের সেই সদস্যদের সঙ্গেও যাদের মাথায় নানা তত্ত্ব ঘুরছিল, কী করা উচিত। সত্যি বলতে, আমি নিজেও মনে করিনি এটা কোনো সহজ সিদ্ধান্ত এবং কোন স্পষ্ট সঠিক উত্তর আছে।
হাউসের যুক্তি, হাকিম জেফরিসের যুক্তি, ছিল—শাটডাউন মানে সংকট। সংকট মানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু মানেই ডেমোক্র্যাটদের সুযোগ, আমেরিকান জনগণের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার। শুমারের যুক্তি ছিল তিনটি ধাপে সাজানো।
প্রথমত, ট্রাম্পকে আদালতে বারবার থামানো হচ্ছিল। এক ডজনেরও বেশি মামলা তার বিরুদ্ধে চলছিল, আর প্রতিবারই হেরে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সরকার বন্ধ করে দিলে আদালতও একসময় থেমে যেতে পারে—আর তাতে ট্রাম্প সেই নিয়ন্ত্রণের হাত থেকে মুক্তি পেতেন।
দ্বিতীয়ত, ডজ নির্বাহী শাখাটাকে ভিতর থেকে খালি করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। সরকার যখন অর্থায়নের সংকটে পড়ে, তখন নির্বাহী বিভাগের হাতে আরও ক্ষমতা চলে আসে—অল্প যে টাকাটা বাকি আছে, সেটা কোথায় ব্যয় হবে সেই সিদ্ধান্ত নেবার। আর সেই বিশৃঙ্খলার সুযোগে ডজ আরও দ্রুত, আরও দূর পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পারত। সরকারটাকে সচল রাখতে চেয়েছিল ডেমোক্র্যাটরাই। ভাঙতে চাইছিল ট্রাম্প আর ডজ। তাই শাটডাউন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চাপের অস্ত্র নয়—বরং সেটা হয়ে উঠত ডেমোক্র্যাটদের নিজেদের অগ্রাধিকারগুলোর বিরুদ্ধে চাপ, তাদেরই রক্ষা করতে চাওয়া সরকারের বিপক্ষে।
তৃতীয়ত, ট্রাম্পের শুল্ক-হুমকিতেই তখন বাজার ইতিমধ্যেই কাঁপছিল। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শক্তিশালী অর্থনীতি আর কম দামের; অথচ তার বদলে আনছিলেন শুধু অরাজকতা।
ঠিক সেই মুহূর্তে—যখন ট্রাম্প নিজেই এক অর্থনৈতিক সংকট ডেকে আনছিলেন—যদি ডেমোক্র্যাটরা শাটডাউন ঘটাত, তবে দোষ কার ওপর চাপবে সেটা নিয়ে তৈরি হতো বিভ্রান্তি। আসল দায়ী কি ট্রাম্প আর তার শুল্কনীতি, নাকি ডেমোক্র্যাট আর তাদের শাটডাউন? এটাই তো রাজনীতির নিয়ম—শত্রু যখন ডুবে যাচ্ছে, তাকে ভেলা ছুড়ে দিও না।
এই তিন যুক্তির পাশাপাশি আমার মনে হয়েছিল আরও একটা বড় ফাঁক আছে। ডেমোক্র্যাটরা মোটেই প্রস্তুত ছিল না শাটডাউনের জন্য। তারা নিজেদেরকেই বোঝাতে পারেনি, জনগণকেও বোঝাতে পারেনি কেন সরকার বন্ধ করতে যাচ্ছে বা আসলে কী অর্জন করতে চাইছে। কোনো কৌশল নেই। কোনো বার্তা নেই।
স্পষ্ট কোনো দাবি ছিল না তাদের কাছে। একমাত্র যে দাবিটার কথা শুনেছিলাম, সেটা হলো—ব্যয়ের বিলটা আরও দ্বিদলীয় আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা উচিত। শুনতেই লাগে নিস্তেজ, কানে বাজে বেসুরো।
তখন আমার কাছেও মনে হয়েছিল শুমারই বোধহয় ঠিক। তখন শাটডাউনের সময় ছিল না—আংশিক কারণ ডেমোক্র্যাটরা মোটেও প্রস্তুত ছিল না জেতার মতো লড়াইয়ের জন্য। কিন্তু মার্চে যে বিলটা পাশ হয়েছিল, যেটা সরকারকে চালিয়ে নিচ্ছিল, সেটার মেয়াদ শেষ হচ্ছে এই মাসের (সেপ্টেম্বের) শেষে।
তাহলে প্রশ্ন আবারও সামনে এসেছে, সিনেট ডেমোক্র্যাটরা কি রিপাবলিকানদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই সরকারকে অর্থায়ন করবে? আমি বুঝতে পারছি না কীভাবে সেটা সম্ভব।
শুমারের আগের একটি যুক্তিও আজ আর টেকে না। প্রথমত, ট্রাম্প আদালতে হারচ্ছেন না, বরং ঠিক উল্টো। সুপ্রিম কোর্ট বারবার তার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে।
চতুর্দশ সংশোধনীর সেই নাগরিকত্বের গ্যারান্টি তিনি নির্বাহী আদেশে মুছে দিয়েছিলেন একতরফাভাবে। তাতে ট্রাম্পকে ভর্ৎসনা না করে, সুপ্রিম কোর্ট উল্টো নিম্ন আদালতকে ভর্ৎসনা করেছে তাদের দেওয়া সেই জাতীয় স্থগিতাদেশের ধরণ নিয়ে। ক্ষমতার প্রয়োগে ট্রাম্পকে সুপ্রিম কোর্ট দিচ্ছে এক অদ্ভুত বিশেষ ছাড়।
প্রশ্ন হলো—সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলো ট্রাম্পকে আসলে এমন কী কী ক্ষমতা দিচ্ছে, যেগুলো বারাক ওবামা বা জো বাইডেন কোনোদিন ভাবেননি তাদের হাতে রয়েছে। আমি মনে করি, কংগ্রেস যেসব অর্থ বরাদ্দ করেছে তা খরচ করতে অস্বীকার করা; আইনে সুরক্ষিত স্বাধীন সংস্থার প্রধানদের হুট করে বরখাস্ত করা; কোনো কারণ ছাড়াই সরকারি কর্মচারীদের চাকরি খাওয়া; ফেডারেল এজেন্সি গুঁড়িয়ে দেওয়া—এগুলো প্রেসিডেন্টের আওতায়। মূলত, আগের প্রেসিডেন্টরা কখনো ভাবেননি যে তাদের হাতে কংগ্রেস পাশ করা আইন কিংবা সংবিধানের পাঠ্যকে অবজ্ঞা করার ক্ষমতা আছে। আমি সংবিধানের অধীনে যে প্রাতিষ্ঠানিক চর্চাগুলো গড়ে উঠেছে সেগুলোকেও বলছি। তারা কোনোদিন ভাবেননি প্রেসিডেন্সি রাষ্ট্রের ক্ষমতা ব্যবহার করে বন্ধুদের পুরস্কৃত করা, শত্রুদের শাস্তি দেওয়া, নিজের পকেট ভরানো, আত্মসাৎ করা সম্ভব। এ তালিকাটা যথেষ্ট দীর্ঘ। যেসব ক্ষমতা ট্রাম্প পাওয়ার ভয়ে ডেমোক্র্যাটরা আতঙ্কিত ছিলেন—তিনি সেগুলো এখন হাতে পেয়েছেন। মার্চে শুমারের যুক্তি ছিল, আদালত ট্রাম্পকে আটকে দিচ্ছে। তাদের কাজ করতে দাও। আজ সেপ্টেম্বরে দাঁড়িয়ে যা স্পষ্টভাবে বলা যায় তা হলো—জন রবার্টস তোমার হয়ে কাজ করবেন না। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে থামাবেন না।
দ্বিতীয়ত, ডজিয়ারের সরকারবিরোধী হামলার পরিসর এখন সঙ্কুচিত হয়েছে। ট্রাম্প আর এলন মাস্কের সম্পর্ক ভাঙল একেবারে অগোছালো আর প্রকাশ্য কলহে। কিন্তু আসল কারণ, আমার মনে হয়, এখন এই সংস্থাগুলো চালাচ্ছে ট্রাম্পের নিজের নিয়োগপ্রাপ্ত লোকেরা। তারা নিজেদের এজেন্সিকে ধ্বংস হতে দিতে চায় না। সম্ভাব্য ব্যর্থতার জন্য দায়ীও হতে চায় না। তাদের দরকার জনবল। আর যেভাবেই হোক, সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই ট্রাম্পকে বিশাল ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছে ফেডারেল কর্মী বাহিনীকে তার ইচ্ছেমতো পুনর্গঠন করার। এর জন্য তার কোনো শাটডাউন দরকার নেই।
তৃতীয়ত, বাজার এখন একধরনের নতুন স্বাভাবিক অবস্থায় গা ভাসিয়ে দিয়েছে, অন্তত আপাতত। ট্রাম্পের শুল্ক জনপ্রিয় নয়, কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষতি যতটা করার, করে ফেলেছে; আর বাকিটা করবে ধীরে ধীরে, যখন বাড়তি দাম আমেরিকানদের পকেটে চাপ বাড়াবে। আমরা মন্দার মধ্যে নেই। অর্থনীতির অবস্থা তেমন খারাপ নয়। ডেমোক্র্যাটরা এই আশায় থাকতে পারে না যে বাজারই এসে তাদের হয়ে কাজ করবে।
কিন্তু আরেকটা জিনিসও বদলেছে। আমরা আর প্রেসিডেন্সির মুজল ভেলোসিটি পর্যায়ে নেই—যেখানে ট্রাম্প শুধু পরীক্ষা করছিলেন, কী টিকে যায় আর কী পড়ে যায়। আমরা এখন সেই পর্যায়ে এসে পড়েছি যাকে বলে কর্তৃত্ববাদী সংহতি—যেখানে পরীক্ষার জায়গা নেই, শুধু প্রতিষ্ঠা আর পোক্তকরণ। আমি খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই—ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্ত করছেন। তিনি এটাকে ব্যবহার করছেন শত্রুদের পিছু ধাওয়া করতে, নিজের পকেট ভরতে, আর নিজের ক্ষমতার শিকড় আরও গভীরে গেড়ে বসাতে।
তিনি যেভাবে এটা করছেন, তা অনেকটা মাফিয়াদের মতো। মাফিয়া যখন কোনো শিল্প নিয়ন্ত্রণ করত, তখনও হয়তো আবর্জনা তোলা হতো, সিমেন্ট কারখানা চলত। কিন্তু ওই শিল্পগুলোর আসল উদ্দেশ্য হয়ে উঠত মাফিয়ার ক্ষমতা আর সম্পদের বিস্তার। ট্রাম্প সরকারকেও সেইভাবে ব্যবহার করছেন। এটাই সেই সরকার, যাকে অর্থায়ন করা ডেমোক্র্যাটদের উচিত নয়। এটাই সেই দানব, যাকে ঠেকানোর চেষ্টা করতে হবে তাদের।
মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে আমরা দেখেছি—ট্রাম্প শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রধানকে বরখাস্ত করেছেন, শুধু কারণ তার চাকরির ডেটা তার পছন্দ হয়নি। আমরা দেখেছি তিনি প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানকেও ছাঁটাই করেছেন, কারণ তারা বলেছিল ইরানে প্রশাসনের আঘাত তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি মাত্র কয়েক মাস পিছিয়েছে। আমরা দেখেছি ট্রাম্প প্রকাশ্যে ভাবছিলেন ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করবেন—শুধু সুদের হার নামানোর জন্য।
পাওয়েল, অবশ্যই, ফেডের প্রধান। আর এখন আমরা দেখছি, ট্রাম্প চেষ্টা করছেন লিসা কুককে বরখাস্ত করতে—একজন ফেডারেল রিজার্ভ গভর্নরকে—অভিযোগ, তিনি নাকি মর্টগেজ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। আমরা দেখছি, ট্রাম্প তার সরকারকে লাগিয়েছেন সেনেটর অ্যাডাম শিফ আর নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল টিশ জেমসের পেছনে।
আবারও, অভিযোগ একই—মর্টগেজ জালিয়াতি। এখানে আমি শুধু একটুকু যোগ করতে চাই—এগুলো এমন না যে ট্রাম্প প্রশাসন হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলো, নির্বাহী শাখায় যারা আছেন তাদের সবার মর্টগেজ কাগজপত্র খুঁটিয়ে দেখা দরকার। যেন তারা মর্টগেজ নৈতিকতা নিয়ে এতটাই উদ্বিগ্ন! এটাই তো কর্তৃত্ববাদী সরকারের চেনা চাল। তাদের হাতে থাকে অঢেল তথ্য। আর তুমি যদি যথেষ্ট খুঁটিয়ে দেখ, তবে সবার জীবনেই কিছু না কিছু “অপরাধ” খুঁজে পাওয়া যায়। আর যদি না-ও পাও, তবুও শুধু বলে দিলেই যথেষ্ট ঝামেলায় ফেলা যায়।
আমরা দেখেছি ট্রাম্পের এফবিআই ঝাঁপিয়ে পড়েছে জন বোল্টনের বাড়িতে—যে বোল্টনকে ট্রাম্প ঘৃণা করেন, কারণ প্রথম প্রশাসনের চাকরি শেষে বোল্টন তার প্রকাশ্য সমালোচক হয়ে উঠেছেন। আমরা দেখেছি ট্রাম্প হুমকি দিচ্ছেন, ক্রিস ক্রিস্টির বিরুদ্ধে তদন্ত করবেন—নিউ জার্সির সাবেক গভর্নর—কারণ ক্রিস্টি টেলিভিশনে ট্রাম্পকে সমালোচনা করেছিলেন।
আমরা দেখেছি ট্রাম্প প্রশাসন জোর করে পদত্যাগ করিয়েছে একের পর এক রিপাবলিকান প্রসিকিউটরকে—কারণ তারা নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামসের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে রাজি হননি। আর ট্রাম্প প্রশাসন যেন ভেবে নিল, অ্যাডামসকে আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে দেওয়ার চেয়ে নিজের দলে টেনে নেওয়াই বেশি সুবিধাজনক।
আমরা দেখেছি ট্রাম্প প্রস্তাব করছেন এনবিসি আর এবিসির সম্প্রচার লাইসেন্সই তুলে নেওয়া হোক—শুধু কারণ তারা তার পছন্দমতো সুরে কথা বলছে না। এবিসি বো ডাউন এবং জিমি ক্যামলের লেট নাইট শো বাতিল করেছে। (এই বিস্তারিত লিখবো)।
ট্রাম্পের হাতে এক দীর্ঘ শত্রুর তালিকা আছে। আর তিনি ফেডারেল সরকারের ক্ষমতাকে কাজে লাগাচ্ছেন সেই তালিকার লোকদের শাস্তি দিতে, হয়রান করতে। আমরা দেখেছি ট্রাম্প পরিবার ঝাঁপিয়ে পড়ছে ক্রিপ্টো দুনিয়ায়—নিজেদের কয়েন আর কোম্পানি বানাচ্ছে, তারপর রাজনৈতিক ক্ষমতা আর খ্যাতি ব্যবহার করে বিনিয়োগ টেনে নিচ্ছে ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের মতো।
গত কয়েক বছরে আমরা দেখেছি সৌদি, কাতারি আর এমিরাতিরা ট্রাম্প পরিবারের ব্যবসায় আর ক্রিপ্টো কয়েনে ঢেলেছে কয়েক বিলিয়ন ডলার। আমরা দেখছি ভারত থেকে ভিয়েতনাম, কাতার পর্যন্ত দেশগুলো প্রতিযোগিতায় নেমেছে ট্রাম্পের গলফ কোর্স আর টাওয়ার বানাতে। গত মার্চে ফোর্বস হিসেব করেছিল—মাত্র এক বছরে ট্রাম্পের সম্পদ দ্বিগুণ হয়ে পাঁচ বিলিয়নের ওপরে পৌঁছেছে। “রাজা হলে কপাল খুলে যায়”—ফোর্বস লিখেছিল। হ্যাঁ, রাজা হলে কপাল খুলেই যায়।
আমরা দেখেছি ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড পাঠিয়েছেন লস অ্যাঞ্জেলেসে, তারপর ওয়াশিংটন ডিসিতে—আরও শহর শিগগিরই ফেডারেল সামরিক দখলে চলে যাবে বলে গুঞ্জন। আমরা দেখেছি মুখোশ পরা আইস এজেন্টরা সারা দেশে হানা দিচ্ছে—তাদের মুখ দেখা যাচ্ছে না, ব্যাজ নম্বর নেই, ওয়ারেন্টও নেই।
আমরা দেখেছি ট্রাম্প পদ্ধতিগতভাবে সরকার থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করছেন ইন্সপেক্টর জেনারেলদের, জ্যাগ অফিসারদের, সেনা কর্মকর্তাদের, ফেডারেল প্রসিকিউটরদের—যে কেউ তার দুর্নীতি, ক্ষমতার সঞ্চয় বা প্রয়োগের পথে দাঁড়াতে পারে, তাকেই। চমকপ্রদ সত্য হলো—৬ জানুয়ারির দাঙ্গাকারীদের তিনি ক্ষমা করেছেন, আর যেসব বিচার বিভাগীয় আইনজীবী তাদের বিচার করেছিলেন, তাদের ডজনকে ডজন বরখাস্ত করেছেন। “এভাবেই কর্তৃত্ববাদ জন্ম নেয়।” এখন কর্তৃত্ববাদ জন্ম নিচ্ছে না। এখন কর্তৃত্ববাদ ঘটছে, চোখের সামনেই। যেমন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওভাল অফিস সোনার সাজে ঘেরা, বাইরে তার মুখোশধারী এজেন্টরা রাস্তায় টহল দিচ্ছে। তার মন্ত্রিসভার বৈঠকগুলো—যেখানে তার নিয়োগপ্রাপ্তরা এমন প্রশংসায় একে অপরকে ছাপিয়ে যেতে চাইছে, যা শুনে ফিদেল কাস্ত্রো পর্যন্ত লজ্জা পেতেন।
স্টিভ উইটকফ, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত, বলেন—“আমার একটাই কামনা—যেন নোবেল কমিটি অবশেষে বুঝতে পারে, আপনি (ট্রাম্প) হচ্ছেন সেই শ্রেষ্ঠ প্রার্থী, যিনি এই সম্মানজনক পুরস্কার পাওয়ার একমাত্র যোগ্য।” এবার বলুন, এটাকে কর্তৃত্ববাদী শাসনের মুখ আর ভাষা ছাড়া আর কিছু কি বলা যায়?
তাহলে প্রশ্ন হলো—ডেমোক্র্যাটরা এখন কী করবে? কী-ই বা করতে পারবে? আমার এলাকার ডেমোক্র্যাট সিনেটর জন অসফের সঙ্গে কথা বলছিলাম—যাকে আমি সত্যিই সম্মান করি। তিনি আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করলেন। আমরা ট্রাম্প কী করছেন সে নিয়ে যা বলি, সবই সত্যি। কিন্তু এর জবাব কি সরকার বন্ধ করা? নাকি এটা কেবল এক ধরনের পলটিকাল মুভ, যা শেষ পর্যন্ত আত্মঘাতী হতে পারে? কখনো কখনো সবচেয়ে কার্যকর কৌশল হলো সংযম। তবু আমি শাটডাউনের পক্ষে । কারণ শাটডাউন একটা চেষ্টা, যেখানে ট্রাম্পের সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্ত করার ছড়ানো-ছিটানো সংকটকে রূপ দেওয়া যায় তীব্র, কেন্দ্রীভূত সংকটে। এমন এক সংকট, যেটার দিকে মিডিয়া আর জনগণের দৃষ্টি ঘুরে যাবে। এই মুহূর্তে ডেমোক্র্যাটদের হাতে কোনো ক্ষমতা নেই—তাই কেউ তাদের কথায় কানও দিচ্ছে না। কিন্তু শাটডাউন ঘটলে মানুষ শুনতে বাধ্য হবে। কিন্তু ডেমদের হাতে থাকতে হবে শক্ত যুক্তি—যা একদিকে জনমতকে তাদের পাশে রাখবে, অন্যদিকে দেখাবে এই দেশে আসলে এখন কী ঘটছে।
আমার মাথায় যে যুক্তিটা ঘুরছে, সেটা কিছুটা এরকম—ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচন জিতেছেন। তিনি বৈধ প্রেসিডেন্ট। তার সরকার অবশ্যই অর্থায়ন পাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা সরকারের মতো আচরণ করে—জনগণের সেবা করে, জবাবদিহি থাকে। কিন্তু কিছু লক্ষণ রেখা থাকে—যা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যায় না। আইস বৈধভাবে নির্বাসন কার্যকর করতে পারে, কিন্তু সেটা হতে পারে না মুখোশধারী লোকদের রাস্তা দাপানো, নিজেদের পরিচয় বা কর্তৃত্ব প্রকাশে অস্বীকার করে। ট্রাম্প পরিবার কোটি কোটি ডলার টেনে নিতে পারে না সেই দেশগুলো থেকে, যারা আমাদের ওপর নির্ভরশীল, আমাদের ক্ষমতা আর নিষেধাজ্ঞাকে ভয় পায়। সেখানে অবশ্যই থাকতে হবে ইন্সপেক্টর জেনারেল, জ্যাগ অফিসার, আর ক্যারিয়ার প্রসিকিউটর—যারা খেয়াল রাখবে সরকার চলছে জনগণের স্বার্থে, ট্রাম্প পরিবারের স্বার্থে নয়।
ডেমোক্র্যাটদের বেছে নিতে হবে কয়েকটা নির্দিষ্ট নীতি—এবং সেটাতে অটল থাকতে হবে। সেই নীতি বাছতে হবে বিচক্ষণভাবে। কঠিন হলেও লাইন ধরে রাখতে হবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ডেমোক্র্যাটরা সেই নীতিগুলো বেছে নেয়নি। সেই বার্তাটাও তারা ঠিক করেনি। দলটার ভেতরেই এখন চলছে বিতর্ক—তারা কি সরাসরি ট্রাম্পের দুর্নীতি আর কর্তৃত্ববাদ নিয়ে কথা বলবে, নাকি শুধু বলবে যে ডিসিতে সশস্ত্র সৈন্য নামানো আসলে গ্রোসারি আর স্বাস্থ্যসেবার দামের থেকে মনোযোগ সরানোর ফাঁদ? সত্যি বলতে, ডেমোক্র্যাটদের সবচেয়ে শক্তিশালী ইস্যুই হলো স্বাস্থ্যসেবা। নিজে আর তার বন্ধুদের জন্য করছাড়ের টাকা জোগাড় করতে ট্রাম্প মেডিকেড লুট করেছেন। ডেমোক্র্যাটদের উচিত নয় কখনো ভোটারদের এটা ভুলতে দেওয়া।
কিন্তু আমার মনে হয় না যে এই দুই বাস্তবতাকে একসঙ্গে গাঁথা অসম্ভব। জর্জিয়ার সিনেটর জন অসফ জুলাই মাসেই সেটা মোটামুটি ভালোভাবে দেখিয়েছিলেন। দুর্নীতির কারণেই তো নার্সিং হোমে অর্থায়ন কেটে ধনীদের করছাড় দেওয়া হলো। দুর্নীতির কারণেই তো ওষুধের প্রেসক্রিপশনের পেছনে তোমাকে গুনতে হচ্ছে আকাশচুম্বী টাকা। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভাঙা সিস্টেমকে ঠিক করবেন। আসল কথা হলো—ট্রাম্প একেবারে ঠগ আর প্রতারক। আর সে রাজা হতে চায়। হ্যাঁ, সিস্টেমটা সত্যিই বেঁকে গেছে, কিন্তু ট্রাম্প সেটাকে সোজা করছে না—বরং নিজের জন্য আবারও বেঁকিয়ে নিচ্ছে।
আমার মনে হয় রাস্তায় মুখোশধারী লোকদের, শহরে সশস্ত্র সৈন্যদের, ট্রাম্প পরিবারের পকেটে ঢুকে যাওয়া বিলিয়ন ডলারকে, এমন এক প্রশাসনকে যা প্রতি সপ্তাহে এমন সব কেলেঙ্কারি উগরে দিচ্ছে, যদি ডেমোক্র্যাটরা এসব নিয়ে ইস্যু বানাতে না পারে, তবে তারা শেষ—আমরাও শেষ।
ধরা যাক, ডেমোক্র্যাটরা কোনো এক ইস্যুতে একমত হল। কিন্তু বার্তাবাহকরা কোথায়? হাকিম জেফরিস আর চ্যাক শুমার কি প্রমাণ করেছেন যে তারা তর্কে জিততে পারেন? জাতীয় উদ্যান বন্ধ হয়ে গেলে, ফেডারেল কর্মীরা বেকার হয়ে গেলে, চেক বন্ধ হয়ে গেলে, বিমান বিলম্বিত হলে—কারণ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা বেতন পাচ্ছেন না—তখনও কি তারা শাটডাউনের সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারবেন? আমি জানি না তারা পারবে কিনা। এমনও হতে পারে যে ডেমোক্র্যাটরা শাটডাউন লড়াইয়ে হেরে যাবে। কিন্তু তারা এখন যা করছে—তার নামও জেতা নয়।
গ্যালাপের হিসাবে, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থন এখন ৩৪%—ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়েও কম, রিপাবলিকান পার্টির চেয়েও কম, আর গ্যালাপের ইতিহাসে কয়েক দশকে সর্বনিম্ন। আসলে যা ঘটছে তা হলো—ডেমোক্র্যাটরা এতটাই অপ্রিয় হয়ে উঠছে কারণ তাদের নিজেদের পক্ষই আর বিশ্বাস রাখছে না তাদের ওপর। নির্বাচনের আগে ৮৭% রিপাবলিকানরা নিজেদের দলকে সমর্থন করেছিল, ৯২% ডেমোক্র্যাটও তাই। কিন্তু তারপর থেকে রিপাবলিকানদের আত্মসমর্থন বেড়ে হয়েছে ৯১%, আর ডেমোক্র্যাটদের নেমে এসেছে ৭৩%-এ। এটা গুরুত্ব রাখে। কারণ যখন আমরা মিডটার্ম নির্বাচন নিয়ে ভাবছি, তখন উদ্দীপনা গুরুত্বপূর্ণ, আস্থা গুরুত্বপূর্ণ। ডেমোক্র্যাটরা যদি ভাবে মানুষ এগিয়ে এসে তাদের জিতিয়ে দেবে, মাঠে নামবে তাদের জেতানোর জন্য, সেটা ভুল ভাবনা । এর বড় সতর্কসংকেত হলো পুওর ফান্ডরেইজিং। ডেমোক্র্যাটরা টাকা তুলতে পারছে না। ক্যান মার্টিনের নেতৃত্বে ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটি একেবারেই বিপর্যয়। জুনের শেষে ডিএনসি-র হাতে ছিল ১৫ মিলিয়ন ডলার—যেখানে আরএনসি-র হাতে ছিল ৮০ মিলিয়ন। আর বাকিটা শুধু অভ্যন্তরীণ কলহে খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে এখন কেন কেউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে অনুমোদন দেবে বা অনুদান দেবে? ভাবুন, ডেমোক্র্যাটরা আসলে আপনাকে কী দিচ্ছে?
রাজনৈতিক বিজ্ঞানী রাসেল হার্ডিন একটা যুক্তি দিয়েছিলেন, ক্ষমতা আসলে সমন্বয়ের সমস্যা। ডোনাল্ড ট্রাম্প একা খুব বেশি কিছু করতে পারে না। সে তো আর ঘরে ঘরে গিয়ে নিজের এজেন্ডা চাপিয়ে দেবে না। তার আসল সুবিধা হলো সমন্বয় তৈরির ক্ষমতা। সে স্পষ্ট বার্তা পাঠাতে পারে। তার হাতে আছে আরও বড় মেগাফোন। সে আরও শক্ত শাস্তি আর পুরস্কার বিলি করতে পারে। প্রতিটি আইন সংস্থা ট্রাম্পের সামনে মাথা নোয়াল, সেটা পরের সংস্থার ‘না’ বলা আরও কঠিন করে তুলল। যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ট্রাম্পের কাছে হার মানল, তারাও একই ফাঁদ তৈরি করল। তাই হাভার্ড যখন প্রতিরোধ করল, সেটা এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল। কারণ সমাজে প্রত্যেক মানুষ, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান একেকটা সমন্বয়ের নোক্তা। বিপরীতে এখন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের দিকে তাকাই, তারা যে বার্তা পাঠাচ্ছে তা হলো—কোনো ঝুঁকি নিও না। সবকিছু স্বাভাবিক। শুধু নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করো ।
আমার মনে হয়, এই কৌশল যেমন ভুল, তেমনি এই বার্তা পাঠানোও ভুল। ২০২৬-এর মিডটার্ম আর মাত্র ১৪ মাস দূরে। রাষ্ট্রযন্ত্র ইতিমধ্যেই সাজানো হচ্ছে রিপাবলিকানদের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার জন্য—রিডিস্ট্রিক্টিং দিয়ে, তথ্য নিয়ন্ত্রণ দিয়ে, শত্রুদের শাস্তি আর হয়রানি দিয়ে, রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো মুখোশধারী আধাসামরিক বাহিনী তৈরি করে, যারা ট্রাম্পের আদেশ পালন করবে। তাহলে কি আমরা শুধু বসে থাকব আর আশায় থাকব সব ভালো হবে?
কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা তো সেই সরকারকে অর্থায়ন করতে পারে না—যেটাকে ট্রাম্প কর্তৃত্ববাদী দখলের যন্ত্রে পরিণত করছেন। তারা তো বিরোধী দল। ওটা করলে সেটা হবে সরাসরি সহযোগিতা। আমি কোনো রাজনৈতিক কৌশলবিদ নই। আমি আশা করি, আমার চেয়েও ভালো কোনো ধারণা কারও কাছে আছে। কিন্তু প্রায় ছয় মাস হয়ে গেল—যেদিন শুমার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, লড়াই শুরু করার সময় এখন নয়। তখন তিনি প্রস্তুত ছিলেন না, দেশও প্রস্তুত ছিল না। কিন্তু এর মধ্যে ডেমোক্র্যাটিক নেতৃত্বের হাতে ছয় মাস ছিল একটা পরিকল্পনা তৈরি করার। যদি শাটডাউনের চেয়ে ভালো কোনো পরিকল্পনা থাকে, খুবই ভালো। কিন্তু যদি এখনো সেই পরিকল্পনা না থাকে, যদি কৌশল হয় শুধু স্বাভাবিক অভিনয় আর ভালো কিছুর আশায় বসে থাকা—তাহলে ডেমোক্র্যাটদের দরকার নতুন নেতৃত্ব।
ভাবনাগুলো অন্তত কিছুটা হলেও আপনাদের উপকারে আসবে বা নতুনভাবে ভাবার অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে আশা করি। সবার প্রতি রইল গভীর ভালোবাসা আর আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।