রাজনৈতিক ইসলামের ছদ্মবেশ
এখানে জোট নয়—পিছন থেকে ছুরি মারা হয়। যারা বোঝে না, তারা আবারও ভুল করবে। আর যারা বোঝে, তারা হয়তো চুপ করে থাকবে—পাছে আবার পার্টির চামড়ার নিচে রক্ত গড়ায়।
সামির আমিন, সেনেগালের ডাকারে অবস্থিত 'থার্ড ওয়ার্ল্ড ফোরাম'-এর পরিচালক। তাঁর সাম্প্রতিক প্রকাশিত গ্রন্থগুলির মধ্যে আছে দ্য লিবারাল ভাইরাস (মান্থলি রিভিউ প্রেস, ২০০৪), আ লাইফ লুকিং ফরওয়ার্ড (জেড বুকস, ২০০৭), এবং দ্য ওয়ার্ল্ড উই উইশ টু সি: রেভল্যুশনারি অবজেক্টিভস ইন দ্য টুয়েন্টি-ফার্স্ট সেঞ্চুরি, যা শীঘ্রই মান্থলি রিভিউ প্রেস থেকে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে তিনি একটি প্রবন্ধ লেখেন, Political Islam in the Service of Imperialism (সাম্রাজ্যবাদের সেবায় রাজনৈতিক ইসলাম)। এই প্রবন্ধটি মূল ফরাসি ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন জেমস মেমব্রেজ।
প্রবন্ধটি পড়ে আমার যা মনে হয়েছিল তাই এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি ।
রিটন খান
রাজনৈতিক ইসলাম এমন এক পরিচয়ের দাবিদার, যা ধর্ম ও রাজনীতির সীমারেখাকে একদম মুছে দেয়। তারা বলে, ইসলামে এই বিভাজন ছিল না, থাকবার কথাও নয়। অথচ এই দাবির ভেতরই এক ধরনের প্রতিক্রিয়াশীল অনুরণন বাজে, যা একসময় ইউরোপের রক্ষণশীলদের কণ্ঠে শোনা গিয়েছিল—যখন তারা প্রগতিবাদীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বলেছিল, ‘আমাদের ঐতিহ্যই যথেষ্ট, আলোর দরকার নেই।’
তবে এই ইসলামবাদীরা ধর্মের মৌল মর্মবাণীর চেয়ে সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দেয় বেশি। তাদের অনুরাগ ধর্মীয় নীতিতে নয়, বরং গোষ্ঠীগত আত্মপরিচয়ে। এদের আগ্রহ কোরআনের গভীর ব্যাখ্যায় নয়, বরং এই তর্কে—“আমরা কারা”। ফলে তারা এমন এক চেহারা তৈরি করে, যাকে ধর্ম বলে মনে হয়, কিন্তু যার ভিতরটা ফাঁপা, মিথ্যা, এবং প্রায়শই কৌশলী। এই কৌশলের সুবিধা নেয় সাম্রাজ্যবাদ—সংস্কৃতির পার্থক্যগুলোকে সামনে রেখে মূল সংঘাত থেকে চোখ সরিয়ে রাখে, যেন আসল দ্বন্দ্বটা শ্রেণির নয়, কেবল বিশ্বাসের।